Friday, April 30, 2010

টয়লেটে বসে বিদ্যুৎ উৎপাদন করুন+টাকা কামাই করুন!


আজকাল আমরা বিদ্যুৎ শেডিং-এ বাস করি। যখন-তখন বিদ্যুৎ চলে যায়। এ শেডিং বন্ধ করতে হবে আমাদেরকেই। যদিও ডায়ালগটা পত্র-পত্রিকা এবং সরকারী সংস্থা হতে বলা হয়,তবুও তার প্রকৃত বাস্তবায়ন করি আমরা ঘরে বসে।
ডায়নিং রুমের লাইট বিনা কারণে জ্বলজ্বল করে, ড্রইং রুমের টিভি মানুষ ছাড়াই কথা বলে, ঘরের পাঙ্খা কিংবা বড়লোকের এসি বিনা বাতাসে চলতে থাকে।
তাইতো আমাদের দেশে এত বিদ্যুৎ স্বল্পতা!
নাকি অন্য কোন কারণ আছে?
এইতো, সরকারী অফিসে একটা ছোট-খাট পার্ট টাইম জব করছি আমি। সেখানে অবস্থা একদম ভিন্ন ধরণের। বিনা কারণে অসংখ্য কম্পিউটার চালু করে বসে আছেন তাঁরা। শুধু তাই নয়,সকাল থেকে রাত আটটা-নয়টা পর্যন্ত নন স্টপ এসিও চলছে।
এ বিষয়ে সতর্কবাণী বলতে গিয়ে আমার ঢের শিক্ষা হয়েছে।
বিদ্যুতের অপচয় রোধকল্পে আমাদেরই এগিয়ে আসা উচিত, এ কথা বলাতে একজন বললেন,
“আমরা সরকারের টাকায় বিদ্যুৎ ব্যবহার করি,তোমার এত জ্বলে কেন?”
এই যদি হয় সরকারী অফিসের মানুষের চিন্তা-চেতনা,তাহলে তো এই দেশের বিভিন্ন সম্পদ রক্ষার্থে যেসব দাবী জানানো হচ্ছে সব উলু বনে মুক্তা ছড়ানোর মতই প্রায়।
আমার লেখা পড়ে অনেকে হয়তো কিছুক্ষণের জন্য ভাববেন যে কথাটি ঠিকই বলেছি,কিন্তু কথায় আছে না।
কুকুরের লেজ বার বছর চোঙে ভরে সোজা করা যায় নি। আর আমরাতো মানুষ,আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশ সবে শুরু হয়েছে। বার যুগেও তা শেষ হবে কিনা আমার ঘোর সন্দেহ আছে।
চলুন তাহলে,কথা না বাড়িয়ে টয়লেটে বসে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবস্থা শিখিয়ে দেই।

টয়লেটে বসে বিদ্যুৎ তৈরির প্রণালীঃ এই রেসিপিতে আপনি টয়লেটে বসেই বিদ্যুৎ তৈরি করে ফেলবেন। পাশাপাশি সেই টয়লেট থেকে টুপাইস ইনকামও করবেন খুব সহজে।
এ জন্য শুরুর দিকে অবশ্য আপনাকে সামান্য কিছু নিজের মূলধন বিনিয়োগ করতে হবে।
বর্তমানে যে হারে বিদ্যুৎএর ঘাটতি দেখা দিচ্ছে তাতে সহজেই অনুমেয় যে নিজেদের গড়া বিদ্যুৎ ছাড়া অন্য কিছু ব্যবহারের গতি আমাদের নেই।
আসুন,ছাগলের মত প্যা প্যা না করে এখুনি বিদ্যুৎ উৎপাদনের আলোচনায় আসি।
বর্তমান সময়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য সবচেয়ে কার্যকরী এবং বিজ্ঞান সম্মত পদ্ধতি হচ্ছে বায়োগ্যাস পদ্ধতি।
বায়োগ্যাস কি সেটা আমরা কম বেশী সবাই জানি।
পশু-পাখি,গরু-ছাগল এবং মানুষের হাগু-মুতু একত্র করে তথা বিভিন্ন শুকনো ও পচনশীল আবর্জনা গচ্ছিভুত করে তা বায়োগ্যাস প্লান্টে জমা করে সহজেই বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়।
বায়োগ্যাসে সঞ্চিত এসব ডাস্টবিন উপাদান কৃত্রিম উপায়ে ভেষজ হয়ে পিষ্ট হয়। এই পিষ্ট হওয়া উপাদান সমূহের যে অভ্যন্তরীণ চাপ তা গ্যাস আকারে বহির্ভূত হয়। সেই গ্যাস বায়োপ্লান্ট সংলগ্ন গ্যাস সিলিন্ডারে জমা হয়।

যদিও এই গ্যাস অনেক খবিস বস্ত দ্বারা উৎপাদন হয়েছে তবুও এই উৎপাদিত গ্যাস গন্ধ ও বর্ণহীন। একটু শুকলেই বোঝা যাবে যে এতে কোন বাজে গন্ধ নেই।
এই গ্যাস দিয়ে টিভি,ফ্রিজ,লাইট,ফ্যান প্রভৃতি চালানো যাবে।
এ পদ্ধতি আমরা জানলেও এর মাধ্যমে নিজেও কি করে ইনকাম করা যায় তা আমরা কেউ জানি না।
বায়োগ্যাসে গ্যাস উৎপাদনের পাশাপাশি কিছু কামাই করার জন্য আপনাকে প্রথমে বায়োগ্যাস সংলগ্ন একটি তাজমহলের মত টয়লেট তৈরি করতে হবে।
সেই টয়লেটের ড্রেনেজ সিস্টেম সমস্ত মল নিয়ে আসবে আপনার বায়োপ্লান্টে (যেখানে বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে)।
এবার আপনি সেই তাজমহল সম টয়লেট খানাকে আধুনিক টাট্টিখানায় পরিণত করুন।
টাট্টির উপরে অবশ্যই বড় করে লিখে দিবেন,


“এখানে প্রসাব করিতে তিন টাকা মাত্র এবং পায়খানা করিতে পাঁচ টাকা মাত্র লাগিবে।”

টয়লেটে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পারফিউম ব্যবহার করবেন,তাহলে দু-চারদিনের মধ্যে আশা করি আপনার টাট্টিতে লোকজন নিয়মিত যাতায়াত শুরু করবে।
আপনি নিজে বসতে না চাইলে কোন ছোট কর্মচারী ছেলে নিয়োগ দিতে পারেন স্বল্প খরচে।
সেই টাট্টির বিল তুলবে,এবং মাসের শেষে আপনার হাতের মোটা একটা খরচের এক্সট্রা ব্যাবস্থা হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
আর অনেকে হয়তো জানেন না কি করে বায়োগ্যাস প্লান্ট তৈরি করতে হয়।
নো প্রবলেম, খুজে দেখুন আপনার আশেপাশে নিশ্চয়ই দু/একজন নাইন-টেনের ছাত্র-ছাত্রী আছে।
সেই ছাত্র-ছাত্রীদের সাধারণ বিজ্ঞান বইয়ে বায়োগ্যাস তৈরির খুটিনাটি এবং প্র্যাকটিক্যাল নিয়ম বিস্তারিত দেওয়া আছে।
আশা করি আপনারা সফল হবেন।
শুভ কামনা রইল।

বিনীত-
মোঃ আরাফাত হোসেন

1 comment: