Saturday, March 20, 2010

আন্তর্জাতিক পুরুষ নির্যাতন দিবস-২০১০!

আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করা শুধু মাত্র অসামাজিকই নয়,বরং সমাজের কিছু বিকৃতিপূর্ণ কুরুচি মার্কা মানুষের অস্থির পরিকল্পনা। তাদের জীবনে এ সমস্ত অপ্রয়োজনীয় অনুষ্ঠান কিংবা সেমিনার ছাড়া আর কিছুই বোধহয় করার নেই।
নারীদের এমনিতেই ইসলাম প্রয়োজনীয় অনুপাতে অধিকার এবং ক্ষমতা দিয়ে দিয়েছে। তাদের জন্য আবার নতুন করে দিবস পালন করা অথবা ঘটা করে তাদের নিয়ে অধিকারের নামে ফ্যাচফ্যাচ করার কোন দরকার আছে বলে মনে হয় না। এ সমস্ত কিছুকে ভন্ডামী-পাগলামী ছাড়া অন্য কিছু ভাবার অবকাশ নেই। নারীদের অধিকার এবং ক্ষমতা যে কতখানি বিস্তৃত হয়েছে তা আমরা মুক্ত বিশ্বের দিকে তাকালেই বুঝতে পারব।
উদাহরণস্বরুপঃ আজকাল টিভি মিডিয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন উপস্থাপনাযোগ্য অনুষ্ঠান,ফ্যাশন,শোরুম কিংবা বড় বড় ইন্ডাস্ট্রিতে চাকরী নিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বদাই নারীর জয়-জয়কার।
এ শুধু যে হলিউড-বলিউডেই ঘটছে তা নয়,বরং বাংলাদেশে তাকালেও এ দৃশ্য এখন অহরহ নজরে পড়বে। দেশের পত্র-পত্রিকাগুলো ফলাও করে নারীদের হাতে যাতে পুরুষের কতৃত্ব চলে যায় সে ব্যবস্থাও করছে। তারা নারীর অধিকারের নামে এমন সব দাবী করছে এবং পুরুষদের ব্যাক্তিত্ব তথা পুরুষত্ব পর্যন্ত পত্রিকাগুলো নারীদের অধিকারের সাথে ভুনা খিচুড়ির মত মিশিয়ে ফেলছে।
একটু জ্ঞানী এবং ভাবুক প্রকৃতির লোকেরা মনের জানালাটা খুলে ফেললেই দেখতে পাবেন নারীর দৌরাত্ব কতদূর পর্যন্ত যেয়ে ঠেকেছে।
নিচ থেকেই শুরু করি- এখন এলাকার অলিগলির মুদি দোকানগুলোতে কাস্টমার বেশী হওয়ার জন্য নারীদের নিয়োগ দেয়া হয়। এ তেমন নতুন ঘটনা নয়,অন্তত ঢাকাবাসীদের জন্য।
বিভিন্ন ভোজ্য পণ্যের কোম্পানীগুলো (যেমন-ফ্রেশ,প্রাণ,হারপিক,অলিম্পিক,আল-আমিন ইত্যাদি) তাদের পণ্যের সাথে দোকানে দোকানে পুরুষ সাপ্লাইয়ারদের পরিবর্তে অল্প বয়সী নারীদের পাঠায়।
বাসা-বাড়িতে যে সমস্ত সরকারী কাজের জন্য মানুষ পাঠানো হয় তার অধিকাংশ নারীরাই হয়ে থাকে।
বিভিন্ন এনজিও সরকারী কিংবা বেসরকারী প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্যসেবা,সেমিনার সার্ভিস,গ্রামীণ প্রজেক্ট ইত্যাদি সমস্ত কাজে পুরুষের চেয়ে নারীদের গুরুত্ব দেয়।
বিভিন্ন ধান্দা মার্কা প্রতিষ্ঠান যথা- ডেসটিনি-২০০০লিঃ,নিউ ওয়ে,ই-লিঙ্ক,পার্ট টাইম জবের নিয়োগ প্রভৃতি সমস্ত কাজে নারী ছাড়া কোম্পানীগুলো একেবারে বাচ্চার মত অসহায়।
কারণ পুরুষরা কাউকে যদি চাপাবাজি করে কোন কিছু করাতে চায়,তাহলে তা কেউ শুনেনা। এমনকি নারীরাও না।
কিন্তু নারীরা সহজেই মিষ্টি কথা দিয়ে নিজের সমগোত্রীয় সহ পুরুষদেরকেও এসমস্ত ভুংচিভাংচি বুঝিয়ে কাজ আদায় করিয়ে নিতে পারে।
তাছাড়া এই মূহুর্তে আমাদের দেশে নারী প্রধানমন্ত্রী আছেন। সুতরাং তিনি থাকার পরও যদি নারী দিবস পালন করে শোক প্রচারের মত করে নারীদের অধিকার আদায়ের জোর নির্মম প্রচেষ্টা চালানো হয়,তাহলে তা নিতান্ত দুঃখের বিষয় বটে।
আমাদের চিন্তা-চেতনায় এমনভাবে নারীরা আটকে গেছে যে আমরা তাদের নির্মমতা দেখেও তাদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করি। এ আমাদের সমাজের পুরুষের মহানুভুবতা ছাড়া কিছুই নয়।
সুতরাং এ সমস্ত বিষয় বোঝার পরও যে সমস্ত পুরুষ নারী দিবসের জন্য বুক চাপড়ে মরে তাদের আত্নার প্রতি শ্রদ্ধার অর্ঘ্য নিবেদন করছি। তাদের মাথায় কিছু আছে কিনা তাতে আমার শুধু দ্বিধাই নয়,বরং ঘোর সন্দেহ আছে।
তাদের উচিত পুরুষদের নিয়ে চিন্তা করা। আজকাল আমাদের সমাজের অবস্থা দেখে হা-হুতাশ করা ছাড়া কিছুই করার থাকে না। কারণ কোন ভদ্র পুরুষও যদি কোন বাড়ি অথবা গাড়ির সামনে কোন প্রয়োজনে দাঁড়িয়ে থাকেন। তাহলে সেগুলোর মালিক কিছুক্ষণ পরই ভয়ে বাড়ি-গাড়ির দরজা বন্ধ করে নিজের সম্পদের চিন্তায় অস্থির হয়ে উঠেন। ভাবেন এ লোক বুঝি ডাকাত কিংবা চোর।
অথচ কোন নারী দাঁড়িয়ে থাকলে তারা মনে মনে শুরুতেই ভাবেন- “আহারে! ভদ্রমহিলা একাকি এখানে কষ্ট করে দাঁড়িয়ে আছেন। নিশ্চয়ই তাঁর কোন সমস্যা হয়েছে।”
পুরুষদের জন্য আঁতকে উঠার মত খবর আরো আছে। ৭ই মার্চ প্রথম আলো,সমকাল অথবা ইত্তেফাক পত্রিকা (আমার সঠিক মনে নেই) ভয়ঙ্কর একটা খবর বের করেছে। তা হল “নারীদেরও পুরুষের সমান সম্পত্তিতে ভাগ দিতে হবে।”
এখন আপনারাই বলুন এ দাবী কি যৌক্তিক নাকি অযৌক্তিক?
ইসলাম মেয়েদের সম্পদ দেওয়ার জন্য যে সাম্যতা সৃষ্টি করেছে তা খন্ডনের অধিকার কি তারা রাখে?
নারী কোন যুক্তিতে পুরুষের সমান সম্পদ পাবে?
নারীরাতো বিয়ের পর পুরুষের ঘরে চলে যায়। সে যদি যাওয়ার সময় তার নিজের ভাইয়ের সম্পদের অর্ধেক কামড়ে ধরে নিয়ে যায়,তাহলে ওই পুরুষের সম্পদের ভাগ তো অনেক কমে গেল।
একটা জিনিস আমাদের মনে রাখতে হবে,সম্পদ কামাই করতে পুরুষের কষ্ট হয়। তার থেকে বড় অংশ যদি নারীরা নিয়ে যায় তাহলে সেই পুরুষকে জীবনে একটু অতিরিক্ত খাটনি করতে হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই।
অথচ ইসলাম বলে নারী যেহেতু বিয়ের পর স্বামীর হেফাজতে চলে যাবে,সেহেতু তার তেমন সম্পদ নেওয়ার দরকার নেই। কারণ তার জন্য স্বামী মহোদয় সব কিছুতে সমান অধিকার প্রতিষ্ঠিত করবেন। সেটা সম্পদ হোক,কিংবা সম্মান হোক। স্বামীর অর্ধেকটা নারীরাই পায়। তাই দুই দিক থেকেই নারীরা ভোগ করবে। অথচ পুরুষ মহোদয় ভোগ করবে শুধু মাত্র উত্তরাধিকার থেকে। এ নিশ্চয়ই পুরুষের জন্য সুখকর হবে না।
এ অবস্থা দেখেও কি ওই সমস্ত পুরুষদের হুশ হয় না।
সমস্যা আরেকটা আছে। সেটা হল পুরুষের কোন প্রতিভা থাকলে টাকার অভাবে তার বিকাশ ঘটেনা মিডিয়া অথবা বিশ্বজগতে।
অন্যদিকে নারীর কোন প্রতিভা থাকলে তা বিকশিত হতে মোটেও দেরী হয়না। কারণ নারীর অনেক কিছু আছে,যেটা পুরুষের নেই। এ অবস্থা চলতে দেওয়া যায় না। পুরুষ দিবস এখন থেকে পালিত হবে প্রতি বছর ৮ই মার্চ,নারী দিবসের প্রতিবাদ জানিয়ে তার সাথে পাল্লা দিয়ে। কারণ নারীদের জন্য এখন পুরুষ অনেক কিছু করে ফেলেছে।
এখন সময় এসেছে নিজেদের জন্য কিছু করার।


মোঃ আরাফাত হোসেন
মিরপুর-১,ঢাকা-১২১৬।

No comments:

Post a Comment