Saturday, March 20, 2010

সরকারের ফুটোয় স্কুল-কলেজ

বর্তমান সময়ে সবচেয়ে ক্ষতিকর পরিবেশ কোনটি,তা বলতে গেলে আগে আসে স্কুল-কলেজের কথা।
আমাদের স্কুল-কলেজগুলো একটা সময় আক্ষরিক অর্থেই পড়াশোনা করার স্থান ছিল । তখন যদিও এখনকার বিংশশতাব্দীর মত আধুনিক সুবিধা ছিল না,তথাপি সমাজের অশিক্ষা,কুসংস্কার,অপ্রাকৃতিক ভীতি প্রভৃতি দূর করতে এবং প্রকৃত জ্ঞানী হওয়ার একমাত্র মাধ্যম ছিল স্কুল-কলেজ। এগুলো আমরা ইতিহাস নাড়াচাড়া করলেই জানতে পারি।
কিন্তু এখনকার এই সময়ে পড়াশোনার মানেই হচ্ছে বিশাল বড় এক কসাইখানা যেখানে ক্রেতার পছন্দ অনুসারে গরুকে বিভিন্নভাবে সাজানো হয়। আমি একটা শিক্ষার্থীকেও খুঁজে পেলাম না যে কিনা চাকরী কিংবা ক্যারিয়ারের জন্য পড়াশোনা করছে না।
পড়াশোনাটা এখন পুরোপুরি ব্যাবসায়ীক।
শিক্ষার্থীরা এই ব্যাবসায়ের ক্রেতা এবং শিক্ষকরা এখানে ব্যাবসায়ী।
তাই আগের মত জ্ঞান অর্জনের উদ্দেশ্য নিয়ে কেউ আর পড়াশোনা করছে না।
নিম্ন মাধ্যমিক পর্বে বাংলা বইয়ে প্রমথ চৌধুরির বই পড়া নামে যে প্রবন্ধটি আছে, আমি তার সাথে একমত। স্কুল-কলেজের বিদ্যা যে কোন মানুষের অন্তরের ইচ্ছাশক্তিকে নষ্ট করে দেয়,ফলে তার আত্নার স্বাধীনতা নষ্ট হয়।
অনেক জ্ঞানী এবং স্থির বুদ্ধিসচেতন ছেলে-মেয়ে আছে,যাদের জীবনে পড়াশোনা হয় না বলে তারা কোন চাকরি পায় না। এ অবস্থায় পিতার যদি কোন সহায়-সম্বল না থাকে,তাহলে ওই সব ছেলে-মেয়েদের জগৎ হয়ে যায় ভয়ঙ্কর অমানবিক কাজ-কারবারের।
আমি বর্তমানের লেখাপড়াকে ঘৃণা করি।
কিন্তু তবুও আমি পড়ছি। কারণ পড়াশোনা করাটা এখন একটা ফ্যাশন। এই ফ্যাশন না করলেই লোকে ভাববে- আহারে, নিশ্চই অভাবী কিংবা অজ্ঞানী পরিবেশের ছেলে।
তাছাড়া আরেকটা ব্যাপার হল,আমার পিতা চান না আমি আমার পড়াশোনা বন্ধ করে অন্য কোন ব্যাবসায়ীক চিন্তা-ভাবনা করি।
তো যা বলছিলাম, এই যুগের পড়াশোনা,বিশেষ করে আমাদের দেশে স্বশিক্ষার কোন সুযোগ নেই। এখানে সমাজ,সরকার এবং শিক্ষকরা একসাথে গিলিয়ে খাওইয়ে দেন আমাদের মত ছাত্রদের। ফলে কারো যদি বিজ্ঞান,পৃথিবী এবং আধ্যাতিক বিষয় নিয়ে শেখার আগ্রহ থাকে তবে অচিরেই তা বিনষ্ট হয়ে যায়।
আওয়ামী লীগ,বিএনপি কিংবা যে সরকারই দেশ শাষন করছে,তারা কেউ-ই আমাদের পড়াশোনাটাকে পাশ্চাত্যের মত পরিবর্তন করতে পারছে না। বরং পরিবর্তনের নাম দিয়ে বর্তমানে পড়াশোনাকে সম্পূর্ণ খুজলির মলম বানানো হয়েছে।
অথচ পাশ্চাত্যের অন্যান্য সব আচরণ,চিন্তা,সমাজ,শিল্প-সাহিত্য আমাদের খুব প্রভাবিত করে!!
একেই বোধহয় বলে-
গরুর লেজের গোছা পায় না,
পাছা নিয়ে টানাটানি।

তবুও ভাগ্যি! একেবারে পিষেতো মরে যাই নি! শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে তো পারছি!
ওইটা আর সরকারের হাতে দিয়ে দিতে হয় নি।

No comments:

Post a Comment